Saturday, February 3, 2018

সরকারি বাঙলা কলেজ

নাম : সরকারি বাঙলা কলেজ, ঢাকা
ধরন : সরকারি
অধিভুক্তি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপিত : ১ অক্টোবর ১৯৬২
অধ্যক্ষ : অধ্যাপক ইমাম হোসেন
অ্যাকাডেমিক কর্মকর্তা :২১
প্রশাসনিক কর্মকর্তা : ৪০০
শিক্ষার্থী : 37,000+
উচ্চমাধ্যমিক :7,000
স্নাতক : ২৫,০০০
স্নাতকোত্তর : ৫,০০০
অবস্থান : মিরপুর , ঢাকা , বাংলাদেশ
শিক্ষাঙ্গন : শহর়
ফোন: +৮৮-০২-৯০০০৭১১
মোবাইল-:+৮৮-০১৯১৭-৩২৮৯৩০
ই-মেইল: info@sarkaribanglacollege.gov.bd
ওয়েবসাইট: www.sarkaribanglacollege.gov.bd

সরকারি বাঙলা কলেজ
বাংলাদেশের ঢাকা শহরে
অবস্থিত একটি কলেজ যা ১৯৬২
সালের ১লা অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত
হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক
শিক্ষায় কলেজ এবং
বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা
ভাষাকে মাধ্যম হিসেবে পরিচয়
করার চাহিদা থেকে
প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম এই
কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।
বর্তমানে কলেজটিতে
উচ্চমাধ্যমিক সহ স্নাতক ও
স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা
কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৮৫
সালে কলেজটিকে সরকারিকরন
করা হয় এবং ১৯৯৭ সালে জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভূক্ত করে
কলেজটির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর
পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।
তবে ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ খ্রিঃ
হতে কলেজটির স্নাতক (সম্মান) ও
স্নাতকোত্তর কোর্স ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত করা
হয়।
------------------------------------
ইতিহাস :
প্রিন্সিপাল আবুল কাশেম বাংলা
ভাষা আন্দোলনের একজন ভাষা
সৈনিক যিনি ১৯৬২ সালে
বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৬৪ সালে বাঙলা কলেজ
মিরপুরে স্থানান্তরিত হয়। এর
আগে প্রতিষ্ঠাকালীন বছরে এর
ক্লাস হতো নবকুমার ইন্সটিটিউটে
রাতের শিফটে।১৯৭১ সালে
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়
পাকিস্তানী হানাদার
বাহিনী ও তাদের এদেশীয়
দোসররা বাঙলা কলেজকে একটি
বধ্যভূমি হিসাবে ব্যবহার করে
ছিল।
বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরুতে
শিক্ষিত বাঙালি বিদ্বান
ব্যক্তিদের কেউ কেউ
বিরোধিতায় নেমেছিলেন।
তাঁদের যুক্তি ছিল, বাংলা
মাধ্যমে লেখাপড়া করলে ছাত্র-
ছাত্রীরা চাকরি ক্ষেত্রে
পিছিয়ে পড়বে। এমনকি ‘বাঙলা
মৌলবি’ জন্ম হবে বলেও ব্যঙ্গ-
বিদ্রুপ করতেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও
বাঙলা মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ
দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ'র সময়
পাকিস্তানী হানাদার
বাহিনী ও তাদের দোসর
অবাঙালি বিহারীরা বাঙলা
কলেজ দখল করে নেয়। দীর্ঘ নয় মাস
অবরুদ্ধ ছিল এ কলেজটি, কলেজের
সাইনবোর্ড নামিয়ে এ সময় ‘উর্দু
কলেজ’ সাইনবোর্ড লাগানো হয়।
বাঙালির জাতীয় জীবনে
সর্বস্তরে বাংলা ভাষাকে
প্রতিষ্ঠিত করা এবং বাংলাকে
উচ্চতর শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে
চালু করার লক্ষ্যে ১৯৬২ সালে
এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রধান
উদ্যোক্তা ছিলেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ
বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন
অধ্যাপক এবং তমদ্দুন মজলিশ-এর
সভাপতি আবুল কাশেম। ১৯৬১
সালে তিনি কতিপয় শিক্ষাবিদ
ও জ্ঞানীগুণীদের সঙ্গে
পরামর্শক্রমে বাঙলা কলেজ
স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাকে
শিক্ষার মাধ্যম ও অফিস-
আদালতের ভাষা হিসাবে চালু
করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এ
উদ্দেশ্যে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ,
প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ , ডক্টর
ইন্নাস আলীসহ তমদ্দুন মজলিসের
কয়েকজন কর্মীকে নিয়ে একটি
প্রস্ত্ততি কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটি কয়েকটি ঘরোয়া
বৈঠকের পর দেশের প্রখ্যাত
শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক,
সাংবাদিক ও বিশিষ্ট
নাগরিকদের নিয়ে বাংলা
একাডেমীতে এক সভা আহবান
করে। ১৯৬১ সালের ১৫
ফেব্রুয়ারি ডক্টর মুহম্মদ
শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠিত সভায় ঢাকায় একটি
বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন
এবং এর প্রাথমিক পদক্ষেপ
হিসেবে একটি বাঙলা কলেজ
প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৯৬১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একই
স্থানে খান বাহাদুর আব্দুর
রহমান খান-এর সভাপতিত্বে
দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায়
২৬ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,
সাহিত্যিক ও সাংবাদিক
উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় বাঙলা
কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষে ৫১
সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংগঠনিক
পরিষদ গঠিত হয়। এ পরিষদে
প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন
তৎকালীন গভর্নর লেফটেন্যান্ট
জেনারেল মোহাম্মদ আজম খান
(সম্মতি সাপেক্ষে), পৃষ্ঠপোষক
রায় বাহাদুর রণদাপ্রসাদ সাহা
ও গুল মোহাম্মদ আদমজী, ডক্টর
মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রিন্সিপাল
দেওয়ান মোঃ আজরফ ও খান
বাহাদুর আবদুর রহমান খান সহ-
সভাপতি, প্রাক্তন ডিপিআই আবদুল
হাকিম কোষাধ্যক্ষ,
প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ
সেক্রেটারি, অধ্যাপক আবুল
কাসেম ও অধ্যাপক হাসান জামান
জয়েন্ট সেক্রেটারি শাহ
মুস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক
মতিউর রহমান অ্যাসিট্যান্ট
সেক্রেটারি। পরিষদের সদস্য
ছিলেন আবুল কালাম শামসুদ্দীন ,
তোফাজ্জল হোসেন মানিক
মিয়া, আবদুস সালাম, সুনীল কুমার
বসু, সাহিত্যিক মুহাম্মদ বরকত
উল্লাহ, অধ্যাপক আবদুল হাই, কবি
ফররুখ আহমদ , অধ্যাপক সৈয়দ আলী
আহসান, ড. মুহাম্মদ এনামুল হক,
বেগম শামসুন্নাহার মাহমুদ,
ব্যারিস্টর আবদুল হক, অধ্যাপক
মোফাখখারুল ইসলাম।
১৯৬১ সালের ১৮ জুন বাংলা
একাডেমী সভাকক্ষে বাঙলা
কলেজ সাংগঠনিক পরিষদের
সভায় ঐ বছর জুলাই থেকে বাংলা
কলেজের কার্যক্রম শুরু করার
সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায়
অধ্যাপক আবুল কাসেম কর্তৃক পেশকৃত
ডিগ্রি কলেজের পরিকল্পনা
সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী কলা অনুষদে
বাংলা, ইংরেজি,
রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের
ইতিহাস ও তমদ্দুন, অর্থনীতি ও
প্রাথমিক বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞান
অনুষদে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন,
গণিত, ইংরেজি ও সমাজবিজ্ঞান
অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম
বছরে প্রিন্সিপালসহ ১০ জন
অধ্যাপক ও ১১ জন অফিস স্টাফ
নিয়োগের প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সিদ্ধান্ত হয় যে, ডিগ্রি
কলেজের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন না
হওয়া পর্যন্ত অধ্যাপকবৃন্দ নিজ নিজ
বিষয়ে তাদের ভাষণ বাংলায়
লিখে আনবেন। কলেজ থেকে
সেগুলি সাইক্লোস্টাইল করে
ক্লাসে ছাত্রদের মাঝে বিলি
করা হবে। বছর শেষে সেসব ভাষণ
একত্রিত করে সম্পাদনার পর
পুস্তকাকারে প্রকাশ করা হবে।
১৯৬২ সালের ৪ মার্চ পূর্ব
পাকিস্তান রাইটার্স গিল্ড
অফিসে বাঙলা কলেজ
সাংগঠনিক পরিষদের ৪র্থ
অধিবেশন বসে। খান বাহাদুর
বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে
অনুষ্ঠিত সভায় মূল আলোচ্য বিষয়
ছিল অর্থ সংগ্রহ ও কলেজের জন্য
স্থান নির্বাচন করা। অর্থ
সংগ্রহের জন্য ঢাকায় ৯ সদস্য
বিশিষ্ট এবং চট্টগ্রামে অপর
একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু
কলেজ চালু করার জন্য সিদ্ধান্ত
চূড়ান্ত করা হলেও এক বছরেও একটি
বাড়ি পাওয়া যায় নি।
অবশেষে ১৯৬২ সালের ১ অক্টোবর
বকশিবাজারের নবকুমার
ইনস্টিটিউটে নাইট কলেজ
হিসেবে বাঙলা কলেজ কার্যক্রম
শুরু করে। ১৯৬২-৬৩ শিক্ষাবর্ষে
একাদশ শ্রেণিতে কলা বিভাগ ও
বিএ প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী
ভর্তি করা হয়।
১৯৬৩ সালে খোলা হয় একাদশ
শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগ। ৩০
জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু
হয় এ কলেজের তবে ১৯৬৪ সালের
মধ্যেই কলেজের ছাত্র সংখ্যা
বেড়ে দাঁড়ায় সাড়ে চার শ’।
শুরুর দিকে কলেজের
প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল
ও অধ্যাপকগণ বিনা বেতনে
বৎসরাধিককাল এবং কেউ কেউ
নামমাত্র বেতনে অধ্যাপনা
করেন। স্বয়ং প্রিন্সিপাল আবুল
কাসেম ৮ বছর বিনা বেতনে
দায়িত্ব পালন করেন, এমনকি
নবকুমার স্কুল ভবনে অফিস কক্ষ করার
মতো স্থান না থাকায় তাঁর
বাসভবন ৩২/২ আজিমপুরের
নীচতলার একটি কক্ষ আসবাবপত্র,
টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সুবিধাসহ
ছেড়ে দেন, যা কয়েক বছর
বাঙলা কলেজের অফিস হিসেবে
ব্যবহূত হয়। কলেজে সাপ্তাহিক ও
ষান্মাসিক পরীক্ষা নেওয়া
হতো। কয়েক বছরের মধ্যে
ফলাফলের দিক থেকে কলেজটি
দেশের প্রথম সারিতে স্থান
করে নেয়। ১৯৬৪ সালে বি.এ
পরীক্ষায় বাঙলা কলেজের
পাশের হার ছিল ৮৭.৫%।
১৯৬৩ সালেই মাধ্যমিক শিক্ষা
বোর্ড এ কলেজের বিজ্ঞান
বিভাগে রসায়ন, পদার্থবিদ্যা,
গণিত ও জীব বিজ্ঞান পড়ানোর
অনুমতি দেয়। ১৯৬৫ সালে
বাণিজ্য শাখা খোলা হয়। ১৯৬৯
সালে বি.কম ও বি.এসসি শ্রেণি
খোলার অনুমতি মেলে।
বাঙলা কলেজ প্রায় একটানা ৭-৮
বছর নবকুমার ইনস্টিটিউট ভবনে
নৈশ কলেজ রূপে চালু ছিল।
স্কুলভবনে একসময় ডক্টর মুহম্মদ
শহীদুল্লাহ কলেজ চালু করার
সিদ্ধান্ত হলে বাঙলা কলেজকে
তা ছেড়ে দিতে হয়। বাঙলা
কলেজ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর পরই
সরকারের কাছে জমি বরাদ্দের
আবেদন জানানো হয়। ঢাকা
শহরের তৎকালীন সীমারেখার
মধ্যে কোনো জায়গা না
পাওয়ায় মিরপুরের জঙ্গলাকীর্ণ ও
খাদযুক্ত জমি হুকুম দখলের জন্য
সরকারে কাছে আবেদন জানান
হয়। ১৯৬৪ সালে বাঙলা কলেজের
জন্য প্রায় ১২ একর জমি বরাদ্দ
পাওয়া যায়। তৎকালীন ডিপিআই
ফেরদাউস খানের চেষ্টায়
বাঙলা কলেজ সরকারের উন্নয়ন
স্কিমভুক্ত হয়। কলেজের নামে
মঞ্জুর হয় অর্থ। পরবর্তীকালে হুকুম
দখলকৃত জমির পাশে আরও কিছু জমি
নিজস্ব অর্থায়নে ক্রয় করা হয়।
কলেজের ভবন তৈরির কাজ
আংশিকভাবে শেষ হলে ১৯৬৯
সালের ৪ অক্টোবর
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয়
গবেষণা ও শিক্ষামন্ত্রী
মোহাম্মদ শামসুল হক বাঙলা
কলেজের বি.এসসি ও বি.কম ক্লাশ
উদ্বোধন করেন।
বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠা হবার পর
কলেজের বিভিন্ন ক্লাশের
উপযোগী বাংলায় লিখিত
কোন পাঠ্যবই ছিল না। অথচ
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ
মাধ্যমিক ও ডিগ্রি শ্রেণি
পর্যন্ত বাংলা মাধ্যমে পরীক্ষা
দেয়ার অনুমতি নেওয়া হয়। কিন্তু
১৯৬৯ সাল পর্যন্ত বাংলায়
প্রশ্নপত্র তৈরির অনুমোদন মেলে
নি। প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম
বিভিন্ন বিষয়ে ৪০টি উচ্চ
শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক বাংলায়
রচনা করেন। পদার্থ বিদ্যা,
রসায়ন, জীববিজ্ঞান, জ্যামিতি,
বীজগণিত, পরিসংখ্যান ইত্যাদি
বিষয়ে বাংলা কলেজের
প্রচেষ্টায় প্রথমবারের মতো
বাংলা পাঠ্যপুস্তক রচিত ও
প্রকাশিত হয়। শিক্ষকদের
বাংলায় প্রদত্ত যেসব ভাষণ
সাইক্লোস্টাইল করে ছাত্রদের
দেয়া হত বছরের শেষে সেসব
সম্পাদনা করে বই আকারে প্রকাশ
করা হয়। এভাবে পাঠ্যপুস্তকের
সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা
করা হয়।
প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা
রাষ্ট্রে সর্বত্র বাংলা প্রচলন
করা সম্ভব, এই চেতনা ও উপলব্ধি
থেকেই প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম
নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও
বাংলা কলেজ ও বাঙলা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার
পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। বাংলা
কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রদের
নিয়ে তিনি পথসভা, জনসভা,
মিছিল ও জনসংযোগের মাধ্যমে
সাইনবোর্ড, নেমপ্লেট,
পোস্টার, ব্যানার বাংলা
ভাষায় প্রচলনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ
করেন। ১৯৬৯ সালের ছাত্র
গণআন্দোলনের সময় সংগ্রামী
ছাত্রদের সহযোগিতায় বাঙলা
কলেজের ছাত্র-শিক্ষকদের
আন্দোলন ব্যাপক গণভিত্তি লাভ
করে।
বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরুতে
ওই সময়ের প্রভাবশালী
সংবাদপত্র দৈনিক ইত্তেফাক,
দৈনিক আজাদ ও পাকিস্তান
অবজারভার ব্যাপক সমর্থন
জুগিয়েছে। এ কলেজ প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম
সভাতেই সিদ্ধান্ত ছিল
বাংলায় প্রশ্নপত্র তৈরি ও উত্তর
দানের সুবিধা দেওয়ার জন্য
তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ,
টেক্সট বুক বোর্ড, বাংলা
একাডেমী প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানকে
অনুরোধ জানানো হবে, এ ছাড়া
বাংলায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও
প্রকাশের জন্যও অনুরোধ থাকবে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাঙলা কলেজ
থেকে চিঠি লিখে ও
স্মারকলিপি দিয়ে এবং বাঙলা
কলেজের পক্ষে প্রতিনিধি দল
গিয়ে সে সকল প্রতিষ্ঠান
প্রধানের সাথে সাক্ষাৎ করে
বিস্তারিত অবগত করানো হয়।
বাঙলা কলেজের এ সব পদক্ষেপ
দেশব্যাপী সাড়া জাগাতে
সক্ষম হয়, এ কলেজেরই পথ ধরে
পরবর্তীকালে পর্যায়ক্রমে
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
বাংলা মাধ্যমে লেখাপড়া
করার ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হয়।
বাঙলা কলেজ প্রতিষ্ঠার শুরুতে
শিক্ষিত বাঙালি বিদ্বান
ব্যক্তিদের কেউ কেউ
বিরোধিতায় নেমেছিলেন।
তাঁদের যুক্তি ছিল, বাংলা
মাধ্যমে লেখাপড়া করলে ছাত্র-
ছাত্রীরা চাকরি ক্ষেত্রে
পিছিয়ে পড়বে। এমনকি ‘বাঙলা
মৌলবি’ জন্ম হবে বলেও ব্যঙ্গ-
বিদ্রুপ করতেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও
বাঙলা মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ
দ্রুতই জনপ্রিয়তা লাভ করে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের
সময় পাকিস্তানী হানাদার
বাহিনী ও তাদের দোসর
অবাঙালি বিহারীরা বাঙলা
কলেজ দখল করে নেয়। দীর্ঘ নয়
মাস অবরুদ্ধ ছিল এ কলেজটি,
কলেজের সাইনবোর্ড নামিয়ে এ
সময় ‘উর্দু কলেজ’ সাইনবোর্ড
লাগানো হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর
নব উদ্যমে যাত্রা শুরু করে এ
কলেজ। এরই ধারাবাহিকতায়
১৯৮৫ সালে কলেজটি সরকারিকরণ
করা হয় এবং ১৯৯৭ সালে জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে
অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালু
করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে
উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে
মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য
শাখায় প্রতি বছর প্রায় ৮০০ জন
শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
এছাড়াও উচ্চমাধ্যমিক,বি.এ, বি.বি.এ ও
বি.এসসি সম্মান এবং মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে।
-----------------------------------
বিভাগ ও অনুষদসমূহ :
***বিজ্ঞান অনুষদ
#রসায়ন বিভাগ
#পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
#গণিত বিভাগ
#মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগ
#উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
#প্রানীবিজ্ঞান বিভাগ
***কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদ
#ইংরেজি বিভাগ
#বাংলা বিভাগ
#রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
#সমাজকর্ম বিভাগ
#ইতিহাস বিভাগ
#দর্শন বিভাগ
#ইসলামিক স্টাডিজ
#ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
***বাণিজ্য অনুষদ
#হিসাববিজ্ঞান বিভাগ
#ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ
#অর্থনীতি বিভাগ
#মার্কেটিং বিভাগ
#ব্যবস্থাপনা বিভাগ
***উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণী :
#বিজ্ঞান
#বাণিজ্য
#মানবিক
------------------------------------ 
ভর্তি যোগ্যতা (2017 সেশন থেকে পরিবর্তন হবে):
***এইচ.এস.সি
i. বিজ্ঞান জিপিএ ন্যূনতম ৪.০০
ii. বাণিজ্য জিপিএ ন্যূনতম ৩.৫
ii. মানবিক জিপিএ ন্যূনতম ৩.০০
------------------------------------ 
***স্নাতক (সমমান) ৪ বছর:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের
শর্তানুযায়ী এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি
পরীক্ষার ৪র্থ বিষয় বাদে ন্যূনতম
সর্বমোট জিপিএ ৪.০০ থাকতে হয়।
------------------------------------
***স্নাতক (পাশ কোর্স) ৩ বছর মেয়াদী:
এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি পরীক্ষায়
ন্যূনতম জিপিএ ৪র্থ বিষয় বাদে
জিপিএ ৪.০০ থাকতে হয়।
------------------------------------
***মাস্টার্স কোর্স:
স্নাতক শ্রেণীতে ন্যূনতম ২য়
শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হতে হয়।
-------------------------------------
ভর্তি প্রক্রিয়া :
অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি চলছে।
ওয়েব সাইটে ক্লিক করলে যাবতীয়
তথ্য জানা যাবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
এইচ.এস.সি কোর্স
শিক্ষার্থীদের ৬ কপি রঙ্গিন
সত্যায়িত ছবি।
প্রশংসা পত্রের সত্যায়িত
ফটোকপি ও মূল কপি।
মার্কসিটের মূল ও সত্যায়িত
ফটোকপি।
------------------------------------
স্নাতক কোর্স :
শিক্ষার্থীদের ৮ কপি সত্যায়িত
রঙ্গিন ছবি।
এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি প্রশংসা পত্র ও
মার্কসিটের মূল ও সত্যায়িত
ফটোকপি।
------------------------------------
মাস্টার্স কোর্স :
শিক্ষার্থীদের ৬ কপি সত্যায়িত
রঙ্গিন ছবি।
এস.এস.সি, এইচ.এস.সি ও স্নাতক
পাশের নম্বরপত্র ও প্রশংসা পত্রের
সত্যায়িত ফটোকপি।
------------------------------------
ভর্তি ফি :
কোর্সের নাম সর্বনিম্ন খরচ সর্বোচ্চ খরচ
এইচ.এস.সি ২,০০০-৩,৫০০
স্নাতক (সমমান) ৪,০০০-৬,০০০
স্নাতক (পাশ) ৩,০০০-৪,০০০
মাস্টার্স ৩,০০০-৩,৫০০
ফি পরিশোধ:
মাসিক ভিত্তিতে বেতন পরিশোধ
করা যায়।
ভর্তির পর বছর শেষে বা পরীক্ষার
আগে একত্রে সকল বকেয়া পরিশোধ
করা যায়।
------------------------------------
লাইব্রেরী :
কলেজটিতে ১ টি লাইব্রেরী
রয়েছে। এটি ৩ নং ভবনে অর্থাৎ
উত্তর পার্শ্বের ভবনের ২য় তলায়
অবস্থিত। লাইব্রেরীতে পাঠ্য বই
ছাড়াও অনেক গল্প, উপন্যাসের বই
রয়েছে। শিক্ষার্থীরা
লাইব্রেরী ব্যবহার করতে পারে।
লাইব্রেরীতে কাঠের টেবিল,
চেয়ার রয়েছে। এখানে একত্রে ৩০
জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে
পারে।
------------------------------------
ল্যাব :
এখানে মোট ২ টি ল্যাব রয়েছে।
এগুলো বিজ্ঞান ভবনের ২য় তলায়
অবস্থিত।
------------------------------------
ড্রেসকোড :
ছেলেদের আকাশি প্যান্ট ও সাদা
শার্ট।
মেয়েদের সাদা সেলোয়ার ও
সাদা কামিজ।
------------------------------------
ক্লাসরুম ও ক্লাস সময় :
ক্লাসে বসার জন্য সাধারণত কাঠের
বেঞ্চ ও টেবিল রয়েছে।
কলজটিতে সকাল ৯.৩০ মিনিট থেকে
দুপুর ৩.৩০ মিনিট পর্যন্ত ক্লাস হয়।
প্রত্যেক ক্লাসের ব্যাপ্তিকাল ৫০
মিনিট।
শুক্রবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির
দিন বন্ধ থাকে।
------------------------------------
ক্যান্টিন :
কলেজের ক্যান্টিন নীচতলায়
অবস্থিত।
সকালে রুটি, ভাজি ও পরোটা
এবং দুপুরে সিঙ্গারা, ভাত ও মাছ
পাওয়া যায়।
গাড়ি পার্কিং
এখানে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা
রয়েছে।
এখানে মোট ২৫ টি গাড়ি
পার্কিং করা যায়।
পার্কিংয়ের জন্য কোন চার্জ
দিতে হয় না।
ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮
টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত
ক্যান্টিন খোলা থাকে।
------------------------------------
ওয়াইফাই সুবিধা :
কলেজ ক্যাম্পাসে "College student wifi" নামে 24 ঘন্টা হাইস্পিড ওয়াইফাই সুবিধা
আছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য। এর জন্য কোন ফি দিতে হয় না।
-------------------------------------
শিক্ষা ভবন :
একাডেমিক ভবন
মোট ৬ টি ভবনের ৫ টিতে
একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত
হয়।
ভবনগুলোতে ওঠার জমা সিঁড়ির
ব্যবস্থা রয়েছে।
ক্লাশরুমগুলো বেশ বড়। একত্রে ৬০ জন
শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারে।
------------------------------------
মাঠ:
কলেজের ভিতরে বড় ১ টি খেলাধূলা
করার মাঠ রয়েছে। ক্রিকেট, ফুটবল,
ব্যাটমিন্টন প্রভৃতি খেলা হয়ে
থাকে।
------------------------------------
বিবিধ :
শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পত্র
শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া হয়।
কলেজে এসে কোন শিক্ষার্থী
অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসার
ব্যবস্থা রয়েছে।
শিক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন
সেমিনার এর আয়োজন করা হয়।
এখানে খেলাধূলার জন্য ১টি ক্লাব
রয়েছে। সদস্য হতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে
যোগাযোগ করতে হয়।
(কিছু তথ্য পরিমার্জিত ও সংযোজনযোগ্য)
তথ্যসূত্র: বাঙলা কলেজ ম্যাগাজিন,বাংলাপিডিয়া,উইকিপিডিয়া ইত্যাদি।
**পরিমার্জনযোগ্য**
তথ্য সংগ্রহে: শাব্বীর আহমাদ পলাশ
_ _রসায়ন বিভাগ,
সরকারি বাঙলা কলেজ।

No comments:

Post a Comment